ওয়েব ডেস্ক: এখানে মা দূর্গাকে ভোগ দেওয়া হয় খই,আতব চাল ও আরসে। পলাশীর যুদ্ধের বছরে খই,আতব চাল ও আরসে দিয়ে পূজারম্ভ কর্মকার বাড়িতে। আসানসোলের বার্নপুর অঞ্চলে হিরাপুরে রয়েছে কর্মকার বাড়ির আদি পুজো। ১৭৫৭ সালে জুন মাসে পলাশীর যুদ্ধ হয় । আর সে বছরই শরতে দুর্গাপুজো শুরু হয়েছিল আসানসোলের হীরাপুরের কর্মকার পরিবারে (Hirapur Krmakar Family Puja)।
আর তাদের এই পুজো (Durga Puja) এবারে ২৬৯ বছরে পা দিল। কথিত আছে এই বাড়ির সদস্য নন্দলাল কর্মকার দামোদর নদীতে স্নান করতে গিয়ে একটি ঘট পান সেই ঘট নিয়ে এসেই তিনি বাড়িতে পুজোর প্রতিষ্ঠা করেন। তখন থেকে ঘটে পুজো হত। কিন্তু সময়ের সাথে ঘটের জায়গায় আনুমানিক ৮০ বছর ধরে মন্ডপে মা দুর্গার প্রতিমা তৈরি করে করে পুজো হয়ে আসছে। এখানে মায়ের মূর্তিতে সাবেকিয়ানার ছোঁয়ার পাশাপাশি ডাকের সাজে মাকে সাজিয়ে তোলা হয় ।
আরও পড়ুন:২৮১ বছরের পুজোর বিশেষত্ব, বাড়ির আনাচে কানাচে রয়েছে ইতিহাস
পুজোর বিশেষত্ব, এখানে কোনরকম পশু বলি দেওয়া হয় না শুধুমাত্র চাল কুমড়ো ও আঁখ বলি দিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে মায়ের পুজো করা হয়। মা দুর্গার স্বপ্নাদেশের পর থেকে খই,আতব চাল ও আরসে দিয়ে পুজোর চারটে দিন ভোগ নিবেদন করা হয় সঙ্গে থাকে ফল ও মিঠায়। প্রত্যেক বছর পুজোর আগেই দেশে ও বিদেশে থাকা কর্মকার পরিবারের সদস্যরা এই পুজোতে যোগ দিতে আসেন। আনন্দে মেতে ওঠা ৮ থেকে ৮০ সকলে। তাই সব মিলিয়েই কর্মকার বাড়ির পুজোর রীতিনীতি একই রয়ে গিয়েছে। পুজোর চারদিনকে ঘিরে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সঙ্গে মেতে ওঠে পাড়া প্রতিবেশীরা।
রথের দিন থেকে এই প্রতিমার কাঠামোয় মাটি দেওয়া হয় বলে পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন । তবে এই ঠাকুর দালানে দুর্গার নিত্য পুজো হয় । রয়েছে একটি ছোট্ট প্রতিমা । সেই প্রতিমাতে রোজ পুজো করা হয় । এছাড়াও মন্দির গাত্রে রয়েছে দশমহাবিদ্যা প্রতিমার রূপ । হীরাপুর অঞ্চলের যে কয়েকটি পারিবারিক পুজো হয় তার মধ্যে কর্মকার পরিবারের পুজোটি আদি পুজো বলেই পরিচিত । জানা গিয়েছে, এই পুজো পরিবারের পূর্বপুরুষ নন্দলাল কর্মকার শুরু করেছিলেন । পুজোতে মায়ের বিভিন্ন রূপ দেখতে পান ভক্তরা এমনই দাবি কর্মকার পরিবারের সদস্যদের। এমনকি তাঁরা এও জানান যে মায়ের মন্দির থেকে নানা রোগের ওষুধও দেওয়া হয়।
অন্য খবর দেখুন